ACC case against 58 people including S Alam's son

এস আলমের ছেলেসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামল

চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের (আইবিবিএল) সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের নেতৃত্বে ব্যাংকটির শুধুমাত্র চট্টগ্রামের চাকতাই শাখা থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। দূর-সম্পর্কের খালাতো ভাই ও এস আলম গ্রুপের বেতনভুক্ত কর্মচারী মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরীকে সামনে রেখে মাত্র তিন বছরে ওই টাকা হাতিয়ে নেয় আলোচিত গ্রুপটি।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলমসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদকের উপ-পরিচালক ইয়াছির আরাফাত বাদী হয়ে চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপ পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত জানান, দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি জানান, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের নেতৃত্বে শুধুমাত্র ব্যাংকটির চট্টগ্রামের চাকতাই শাখা থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ব্যাংক এমডির আত্মীয় ও এস আলম গ্রুপের বেতনভুক্ত কর্মচারী মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম সারওয়ার চৌধুরীর মাধ্যমে তিন বছরে ওই টাকা আত্মসাৎ করে তারা। ইসলামী ব্যাংকের ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ড. সেলিম উদ্দিন, তৎকালীন এমডি ও পরিচালকসহ ৩৪ কর্মকর্তার পাশাপাশি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিক মিলিয়ে মোট ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

দুদকের অনুসন্ধান টিমের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম (এস আলমের ছেলে), সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তানভীর আহমদ, ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক ড. মো. ফসিউল আলম, কাজী শহীদুল আলম, ড. মো. সিরাজুল করিম, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, মো. জয়নাল আবেদীন, সাবেক পরিচালক খুরশীদ উল আলম, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর ও মোহাম্মদ সোলায়মান, পরিচালক মো. কামরুল হাসান ও সাবেক নমিনী পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী ও কে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি ও চিফ হিউম্যান রিসার্চ অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মিফতাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ সাব্বির, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. রেজাউল করিম, বর্তমান উপব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সাবেক এসইভিপি ও এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, আবু ছাঈদ মুহাম্মদ ইদ্রিস ও সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ, ব্যাংকটির বিনিয়োগ প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফরিদ উদ্দিন, ইসলামী ব্যাংকের কক্সবাজার শাখার ম্যানেজার আমান উল্লাহ, চট্টগ্রামের চাকতাই শাখার সাবেক ম্যানেজার ও বর্তমানের এফএভিপি মোহাম্মদ আলী আজগর, চাকতাই শাখার সাবেক বিনিয়োগ ইনচার্জ খাজা মোহাম্মদ খালেদ, চাকতাই শাখা প্রধান ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনজুর হাসান, ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জোনের প্রধান মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী এবং দক্ষিণের অপর জোনপ্রধান ও এসইভিপি মিয়া মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ।

ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে আসামি হয়েছেন- মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সওয়ার চৌধুরী, চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইন ট্রেড লিংকের মালিক মোহাম্মদ এরশাদ হোসাইন চৌধুরী, বিসমিল্লাহ ট্রেডিং কর্পোরেশানের মালিক মোরশেদুল আলম, মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সে মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, চেমন ইস্পাত লিমিটেডের পরিচালক মুহা. নজরুল ইসলাম, ওই প্রতিষ্ঠানের এমডি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম চৌধরী, পরিচালক মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, রেইনবো কর্পোরেশনের মালিক রায়হান মাহমুদ চৌধুরী, আনছার এন্টারপ্রাইজের মালিক আনছারুল আলম চৌধুরী, সোনালী ট্রেডার্সের মালিক সহিদুল আলম, ফেমাস ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক আরশাদুর রহমান চৌধুরী, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশনের এমডি মো. রাশেদুল আলম, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর, গ্রিন এক্সপোজ ট্রেডার্সর মালিক এম এ মোনায়েম, কোস্টলাইন ট্রেডিং হাউজের মালিক এরশাদ উদ্দিন, জাস্ট রাইট ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন, এক্সক্লুসিভ বিজনেস হাউজের মালিক ফেরদৌস আহম্মদ বাপ্পি, এনেক্স বিজনেস কর্নারের মালিক আনোয়ারুল আজম, সেন্ট্রাল পার্ক ট্রেডিং হাউজের মালিক মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম, জুপিটার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক মোহাম্মদ মামুন, চৌধুরী বিজনেস হাউজের মালিক মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী, ডিলাক্সিয়াম ট্রেডিং কর্পোরেশনের মালিক কাজী মেজবাহ উদ্দিন, সোশ্যাল ট্রেড সেন্টারের মালিক আলী জহুর এবং শাহ আমানত ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী চৌধুরী।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল। এ দলের অপর দুই সদস্য হলেন- উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার।