কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার কস্তুরাঘাটে বাঁকখালী নদীর তীরে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা উচ্ছেদে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে অভিযানের শুরুতেই দখলদারদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশের এক সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযানে দখলকৃত স্থাপনার মালামাল ও ভরাট মাটি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। নিলামে ৬ লাখ টাকায় ডাক পড়ে, যা সরিয়ে নিচ্ছে ক্রেতা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কস্তুরাঘাট-খুরুশকূল সংযোগ সেতু সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে দখলদাররা বাধা দেয়। এসময় দখলদারদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশের কনস্টেবল করিম আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান জানান, ঘটনার সময় হামলাকারিদের ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, দুই দিনে তিন একরের বেশি জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। প্রথম দিনে উচ্ছেদ হওয়া মালামাল ও ভরাট মাটি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। মঙ্গলবারের উচ্ছেদের পরও নিলাম হবে।
তিনি জানান, ৮১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকখালী নদীর সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে কস্তুরাঘাট-নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার এলাকায়। গত ১০-১২ বছরে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
২০১০ সালের প্রজ্ঞাপনে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে বিআইডব্লিউটিএকে দায়িত্ব দিলেও জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় দখল অব্যাহত থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে যৌথ অভিযানে ৬ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে আবারও নদী দখল হয়ে যায়।
গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট নির্দেশনা দেয়, চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ প্রেক্ষিতেই সোমবার থেকে কক্সবাজারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এই অভিযানে নদীর তীরে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এরপর নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।”