মিলেমিশে লুটপাট, পাচারকালে আটক ৭

কক্সবাজার

সমকাল

মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাচারের সময় ১৫ কোটি টাকা মূল্যের তামার তার আটক করেছে নৌবাহিনী। এ কাজে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। পাচার চক্র আটকের অভিযানে নেতৃত্ব দেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ছৈয়দ আহমেদ শাকিব। প্রকল্প এলাকা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী মিলেমিশে লুটপাট করা হচ্ছে, যা তিন কর্মকর্তা আঞ্জাম দেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন আটক ব্যক্তিরা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী।

আটক ব্যক্তিরা হলেন– মহেশখালী মাতারবাড়ী মাইজপাড়া এলাকার ছবিরের ছেলে মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম ভাটিয়ারীর খাদিমপাড়ার এবাদুল হকের ছেলে নিজাম উদ্দিন, সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম, ফেনী সোনাগাজীর চরগণেশ এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে জাকির হোসেন, পূর্ব সুধাপুর এলাকার জেবল হকের ছেলে নুরুল হক, ছাগলনাইয়ার নাঙ্গলমোড় এলাকার মো. ফারুক ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ এলাকার মো. কামরুল। তাদের নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

জানা গেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে নৌবাহিনীর একটি দল মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের চার নম্বর জেটিঘাটে অভিযান চালায়। এ সময় হাতেনাতে আটক করা হয় লুটের সামগ্রীসহ জড়িতদের।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট করছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবারও চারটি কনটেইনারে তামার তার পাচার করে চট্টগ্রামের ইকবাল মেরিন কোম্পানির কাছে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের এ মালপত্র পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) এমডি আবুল কালাম আজাদ, প্রধান প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম ও সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলফাজ হোসেন। 

জানা যায়, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে প্রকল্প পরিচালকসহ ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে আছেন– সিপিজিসিবিএল নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) মোহাম্মদ শহিদ উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন) কামরুল ইসলাম, সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা আলফাজ উদ্দিন ও ডিজিএম (ডেপুটেশন) মতিউর রহমান।

যোগসাজশে লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে জানতে এমডি ও প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি জবাব দেননি কোনো মেসেজেরও।

দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে বিভিন্ন নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে।