অবশেষে চট্টগ্রামে শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়াল সড়ক নামেই আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলো এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে – চলবে না মোটরসাইকেল

চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে প্রায় সাত বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ওয়াসিম আকরাম উড়াল সড়ক।

শুক্রবার সকালে নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই উড়ালসড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

আজ থেকে নির্দিষ্টহারে টোল পরিশোধ করে এ উড়ালসড়ক দিয়ে চলাচল করবে দশ ধরনের যানবাহন। তবে নিষিদ্ধ থাকবে মোটরসাইকেল চলাচল।

উদ্বোধনের পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের গাড়ি থেকে টোল আদায়ের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এখন থেকে মোটরসাইকেল এবং ট্রেইলর ছাড়া ১০ ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। টোলের পরিমাণ কিছুটা বাড়তি হলেও কষ্টহবে অনেক কম। এতে খুশী যানবাহন চালক ও যাত্রীরা।

আপাতত উড়ালসড়কে টোল আদায় করবে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ– সিডিএ। টোলের হার ধরা হয়েছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৩০ টাকা, প্রাইভেট কার ৮০ টাকা, জিপ ও মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ও ট্রাক ২০০ টাকা, বাস ২৮০, ট্রাক ৩০০, এবং কাভার্ড ভ্যানের জন্য সর্বোচ্চ ৪৫০ টাকা। এ ছাড়া উড়াল সড়কে বসানো হয়েছে স্পিড ক্যামেরাও।

সিডিএর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল কবির বলেন, দেশের সবচেয়ে বেশি দৈর্ঘের উড়াল সড়ক হিসেবে টোল নির্ধারণ অনেক কম। তবে মানুষকে বাস্তবতা মেনে নিয়ে বোঝা মনে না করতে বলছেন তিনি। এছাড়া নিরাপত্তার খাতিরে মোটরসাইকেল চলাচলে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলেও জানান, সিডিএর চেয়ারম্যান।

এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে – প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, সড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি গাড়ির গতী নিয়ন্ত্রণে স্পিড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পয়েন্টে র‌্যাম্পগুলোর কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরো ৬-৭ মাসের মতো।

২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মিত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধন হলেও পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয় গত বছরের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে। এদিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উড়ালসড়কের নামকরণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরনীয় করে রাখতে সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম শহীদদের নামে করা হচ্ছে। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে শহিদদের স্মরণে স্থাপনা তৈরিসহ নামকরণ করা হচ্ছে যেন মানুষ তাদের আত্মত্যাগ ও অবদানের কথা মনে রাখেন।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই উড়ালসড়কের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে।