পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ার টইটংয়ের ঢালার মুখ সোনাইছড়ি ছড়াতে চলছে বালি উত্তোলনের মহোৎসব। বনবিভাগের মালিকানাধীন রিজার্ভ জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন যজ্ঞে মেতে উঠেছে প্রভাবশালী বালিখেকো চক্র।
সাপ্তাহ আগে প্রশাসন মোবাইল কোর্টে অভিযান করেছেন বালি জব্দ করেছে। প্রশাসনের এ অভিযানকে কোন তোয়াক্কাই করছে না।
পাহাড়ি প্রবাহমান ছড়ায় স্যালো মেশিন বসিয়ে প্রতিনিয়ত বালি উত্তোলন করছেন। এতে করে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি ছড়াসহ এর নিকটবর্তী স্থানে পাহাড়, উঁচু ও মাঝারি উচ্চতার টিলাগুলি চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। টিলা ধসে চলছে বালি উত্তোলন। এতে করে ছড়ার গতি হচ্ছে পরিবর্তন। ছড়ার পার্শ্ববর্তী স্থানে রিজার্ভ জমিতে মানুষের প্রচুর বসতভিটা ও বাড়ি রয়েছে। বালি উত্তোলনের ফলে এ সব ভিটাসমূহ বিলীন হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
(০৯ নভেম্বর) সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি ঢালার মুখ নবী হোসেন প্রকাশ নবু মেম্বারের বাড়ীর পাশে রিজার্ভ ও ছড়ার পার ভেঙ্গে বালি উত্তোলন করছেন নবী হোসেন মেম্বার নিজে।
তারা প্রতিনিয়ত ওই ছড়া থেকে বালি উত্তোলন করে চলছে। চৌকিদারপাড়ার ১০ থেকে ১৫ টি বসতভিটার নিকট থেকে তোলা হচ্ছে এ সব বালি। সোনাইছড়ি ছড়ায় বালি হ্রাস পেয়েছে। বর্তমান সময়ে চলছে অনাবৃষ্টি। ছড়ায় নেই পানির স্রোতধারা। পাহাড় থেকে নেমে আসা ওই ছড়ায় এখন পানির স্তর একদম নিচে। তবে ছড়ায় বালি না থাকলেও চলছে বালি উত্তোলন কাজ।
চৌকিদারপাড়া মসজিদের পাশে রিজার্ভ ভেঙে বালি উত্তোলন করছেন একই এলাকার মুহাম্মদ বাদশা।
টৈটং ইউনিয়নের বনকানন এলাকায় সোনাইছড়ি ছড়া থেকে রিজার্ভ পাহাড়ের টিলা ভেঙে স্যালো মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনে একটি পয়েন্ট ও মধুখালী মনু মাঝির দোকানের পাশে রিজার্ভ ভেঙে বালি উত্তোলন। এ দুইটি পয়েন্ট থেকে বালি উত্তোলন করছেন বনকানন এলাকার বাসিন্দা যুবলীগ নেতা জাকের হোসেন।
টৈটং ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহমান, আলী হোছাইন, সাহাদাতরা বলেন, বালু দস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। তাদের বালি উত্তোলনের কারণে ধব্বংস হচ্ছে মানুষের বসতবাড়ী ও রিজার্ভ পাহাড় ও চলাচল রাস্তা। ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি।
তারা আরো জানান, সোনাইছড়িতে একটি বড় কবরস্থান রয়েছে। এটি ১শ বছরের আগের। আগে ছিল ৭ কানি আয়তন। এখন কবরস্থানটি ৫ কানির মতো হবে। ২ কানি ছড়ায় বিলীন হয়েছে। নবু মেম্বার,জাকের হোসেন,বাদশা এরা কয়েক বছর ধরে দাপট দেখিয়ে বালি তোলা অব্যাহত রেখেছে।
চৌকিদারপাড়ার আরো অনেকে জানান, নবু মেম্বার ও জাকের হোসেন এবং বাদশা পেশীশক্তির জোর দেখিয়ে পাহাড়ি ছড়া ও রিজার্ভ ভেঙে বালি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা পাহাড় ও প্রকৃতি ধব্বংস করে দিচ্ছে। প্রশাসন যে অভিযান করছে এটা নামে মাত্র। অবৈধ বালি উত্তোলন কারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বারবাকিয়া দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন,যারা অবৈধ বালি উত্তোলন করছেন তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।