প্রত্যেকটা মানুষেরই প্রেমে পড়া উচিত : পারসা ইভানা

বিনোদন

স্বভাব-আচরণে পারসা ইভানা যেন পাশের বাড়ির শান্ত মেয়েটা। পর্দায়ও এমন রূপেই বেশি দেখা যায় তাঁকে। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাঁর প্রতিবাদী রূপ দেখা গেছে ফেসবুক ও রাজপথে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে ফিরেছেন শুটিংয়ে।

তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম।

ব্যাক টু লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এ সপ্তাহে শুটিংয়ে নেমেছেন পারসা ইভানা। হালের প্রশংসিত নির্মাতা ভিকি জাহেদের একটি নাটকে অভিনয় করেছেন। নাম চূড়ান্ত না হওয়া নাটকটিতে তাঁর সঙ্গে আছেন খায়রুল বাসার ও প্রান্ত।

অভিনেত্রী জানালেন, ভিকির অন্যান্য কাজের মতো এটিও রহস্যধর্মী গল্প। ইভানা বলেন, “ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ভিকি ভাইয়ের সঙ্গে মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছিলাম। ফিকশন এই প্রথম। তিনি অসাধারণ একজন নির্মাতা।
তাঁর প্রায় সব কাজই আমার দেখা। সবচেয়ে প্রিয় ‘চিরকাল আজ’। প্রত্যেক নির্মাতার নিজস্বতা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, ভিকি ভাইয়ের সেটা আছে। তাঁর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। বাকিটা তিনি জানেন, আমি কতখানি পেরেছি।

শান্ত নাকি প্রতিবাদী

পর্দায় যাকে শান্তশিষ্ট চরিত্রে দেখে অভ্যস্ত দর্শক, তাঁকে হঠাৎ প্রতিবাদী রূপে দেখা গেল আন্দোলনের সময়ে। বাস্তবে আসলে কেমন পারসা ইভানা? ‘অন্যায়কে অন্যায় বললে যদি প্রতিবাদী বলেন, তাহলে প্রতিবাদী। সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা বলা উচিত। ওই সময়ে (আন্দোলন) মনে হয়েছে, অন্যায় হচ্ছে, কথা বলা উচিত, তাই বলেছি। এর মানে এই নয়, আমি অনেক প্রতিবাদী কিংবা অনেক কিছু করে ফেলেছি। শিক্ষার্থীদের ওপর সহিংসতা দেখে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। নিজের বিবেক থেকে কথা বলার চেষ্টা করেছি আর কি। বাস্তবে আমি শান্তশিষ্ট, তবে সত্যকে সত্য বলতে জানি, মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে জানি’—জবাব ইভানার।

প্রত্যাশা ও পরামর্শ

আওয়ামী সরকার পতনের পর সরকার থেকে শুরু করে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এই পরিবর্তন নিয়ে পারসা ইভানা বলেন, ‘আমাদের মানসিকতা আরো পরিবর্তন করতে হবে। নিজেরা যত দিন না ঠিক হব, তত দিন কিছুই ঠিক হবে না। সব কিছুতে বাহবা দিতে চাই না। কিছু জিনিস খুব খারাপ হচ্ছে। ভালো-খারাপ মিলিয়েই জীবন। তবে খারাপের পাল্লা কমে যাক, এটাই চাই। আমি চাই একটা সুস্থ সমাজ, যেখানে আমরা ভালোভাবে থাকতে পারব, কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হবে। যে-ই অন্যায় করুক, তার যেন শাস্তি হয়।’

দেয়ালে দেয়ালে তুলির আঁচড়

অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে চলছে অবকাঠামো সংস্কার। দেয়ালে দেয়ালে এঁকেছে চিত্রকর্ম। এতে শামিল হয়েছেন পারসা ইভানাও। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘ছোটবেলায় মা আমাকে শিল্পের তিনটি শাখায় যুক্ত করেছিলেন—ছবি আঁকা, গান ও নৃত্য। ছবি এঁকে পুরস্কারও পেয়েছিলাম ছোটবেলায়। এবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আঁকাআঁকি করে বেশ ভালো লেগেছে। শহরকে সুন্দর রাখতে ওরা পারিশ্রমিক ছাড়াই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।’

আরো কাজের খবর

‘শেষমেশ’ অভিনেত্রী জানালেন, বর্তমানে তাঁর হাতে একাধিক প্রজেক্ট রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তানিম রহমান অংশু ও ইমরাউল রাফাতের দুটি নাটক। একটিতে তাঁর সহশিল্পী জিয়াউল হক পলাশ, অন্যটিতে আরশ খান। এ ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফরম বঙ্গর জন্য একটি ওয়েব সিরিজের ব্যাপারেও কথা চলছে।

মন খারাপের তরজমা

ফেসবুকে ইভানার সাম্প্রতিক পোস্টগুলো দেখলে আঁচ করা যায়, কোনো কারণে তাঁর মন বিষণ্ন। সত্যিই কি তাই? অভিনেত্রীর জবাব, ‘মন তো খারাপ হয়। মা দেশের বাইরে থাকেন। এখানে সব কিছু একা সামলাতে হয়। একটু উদাসীনতা তো থাকেই। প্রত্যেক শিল্পীর মধ্যেই এটা থাকে। আমি একটু প্রকাশ করে ফেলি।’

কথার রেশ ধরে প্রেম-ভালোবাসা বিষয়ে ইভানার ভাবনা জানতে চাইলে বলেন, ‘ভালোবাসার সম্পর্ক সবারই থাকে। আমার এই মুহূর্তে নেই। কখনো হয়তো হবে। আমার কাছে মনে হয়, ভালোবাসা সুন্দর। প্রত্যেকটা মানুষেরই প্রেমে পড়া উচিত, ভালোবাসা উচিত এবং ভালোবাসার মানুষকে ভালো রাখা উচিত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *