নিজস্ব প্রতিবেদক
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো এলিট ম্যারাথন। এবারের প্রতিযোগিতায় ৪ ক্যাটাগরিতে অংশ নেন এক হাজারের বেশি প্রতিযোগী। এর মধ্যে ৫০ জনের বেশি ছিলেন বিদেশি নাগরিক।
শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টা, তখনো পূর্ব আকাশে উঁকি দেয়নি সূর্য। মেরিন ড্রাইভের রেজুখালে হাজির নানা বয়সী দৌড়বিদ। প্রাথমিক অনুশীলন শেষে ঠিক ৬টায় শুরু হয় প্রথম ক্যাটাগরির ৪২ কিলোমিটারের দৌড়। মেরিন ড্রাইভ পার হয়ে প্রতিযোগীরা নেমে পড়েন সাগরতীরের বালিয়াড়িতে।
একপাশে সাগর, অন্যপাশে সবুজ ঝাউবাগান; প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকনের মধ্য দিয়ে কেউ শেষ করেন ৪২.২, ২১.১, ১০ ও ২ কিলোমিটার ম্যারাথন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল ৭ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধও। ৪২.২ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ১৯০ জন, ২১.১ কিলোমিটার ক্যাটাগরিতে ৩৮৫ জন, ১০ কিলোমিটার ক্যাটাগরি ৪০০ জন ও ২ কিলোমিটার ক্যাটাগরি ৩৩ জন প্রতিযোগী অংশ নেন।
এবারের আয়োজনে অব্যবস্থাপনা থাকলেও সুস্বাস্থ্যের জন্য দৌড়ের বিকল্প নেই বলেই আয়োজনে অংশ নেন বলে জানান আগ্রহীরা।
বগুড়া থেকে আসা দৌড়বিদ হামজা বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে সুস্থ থাকার জন্যই দৌড়ানো। যদি সুস্থ থাকতে চান নিয়মিত দৌড়ান এবং মাঝে-মধ্যে ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করুন।
রংপুর থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করি একটা অনুপ্রেরণার জন্য এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করার জন্য।
ঢাকা থেকে ৭০ বছরের আব্দুল হালিম বলেন, দৌড়ানোর জন্য বয়স কোন ব্যাপার না। যে কোন বয়সে দৌড়াতে পারবেন। শুধু মনোবল থাকলেই হলো।
নারী দৌড়াবিদ সালমা বলেন, কক্সবাজারে ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে অসাধারণ লাগছে। একদিকে সাগর, অন্যদিকে ঝাউবাগান এটাই প্রথম এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ।
তবে ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী অনেকেই অভিযোগ করেন, চরম অব্যবস্থাপনা ছিল পুরো আয়োজন জুড়ে।
সোহেল নামের দৌড়বিদ বলেন, ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ ছিল। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। কিন্তু আয়োজকরা এখানে একটি মেডিকেল টিমও রাখেনি বা আমি দেখতে পায়নি।
আরেক দৌড়বিদ সিয়াম বলেন, ম্যারাথনে কোনো ধরনের মেডিকেল টিম ছিল না। একই সঙ্গে পানি সংকট ছিল। এছাড়াও শিশুদের পড়তে হয়েছে চরম খারাপ অবস্থায়। আয়োজকদের কাছে আমরা এমনটা আশা করেনি। ভবিষ্যতে এ ধরণের আয়োজনে আবার আসবো কিনা চিন্তা করতে হবে।
পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও দৌড়বিদদের রানিংয়ের সুযোগ করে দিতেই এই ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়। এলিট ম্যারাথনের প্রধান সমন্বয়ক শহিদ সরওয়ার বলেন, মূলত দৌড়বিদদের রানিংয়ের সুযোগ করে দিতেই এ আয়োজন করা। এবারের আয়োজনে যত ভুলভ্রান্তি হয়েছে তা নজরে এসেছে। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে এ ধরনের ভুলভ্রান্তি সমাধান করা হবে। আগামীতে চেষ্টা করব আরও বড় পরিসরে এই এলিট ম্যারাথন যাতে করা যায়।
ম্যারাথনে ব্রাজিল, ফিলিপাইন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অংশ নেন অর্ধশত বিদেশি প্রতিযোগীও।