দানা’র ঢেউয়ে দুই খণ্ড ইনানী জেটি !

কক্সবাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি



কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল ঢেউয়ে ইনানী জেটির একটি অংশ ভেঙে গেছে। পর্যটকদের জন্য নির্মিত এই জেটি ছাড়াও উত্তাল ঢেউয়ে আশপাশের এলাকার অবকাঠামোতেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ভেঙে যাওয়া জেটি দেখতে অনেকে ওই এলাকায় জড়ো হন। তারা বলছেন, কক্সবাজারে এভাবে উপকূলের অবকাঠামো ও সৌন্দর্য ক্ষতি হওয়া পর্যটন শিল্পের জন্য একটি বড় আঘাত।

পাটোয়ারটেক এলাকার বাসিন্দা সাইফ উদ্দিন বলেন, গতকালও জেটিটি শক্ত মজবুত ছিল কিন্তু ঘুর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে সাগর ক্রমে ফুসে ওঠায় ঢেউয়ের ধাক্কা এসে জেটিতে লাগে। যার কারণে পানির দিকের একটি অংশ ভেঙে যায়।

এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর ইনানীতে আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ার উদ্বোধন শেষে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত প্রায় ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কজওয়ে জেটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন সরকার প্রধান।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চি বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতিভারি (২ ৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘন্টায় ১১০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে উপকূলবর্তী এলাকাসমূহে সতর্কতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে এবং সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি উদ্ধারকারী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে।

পরিস্থিতির উন্নয়ন অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা জারি করা হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।