দরিয়া নগর ডেস্ক
চট্টগ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় আহত বন্য হাতিটি মারা গেছে। চট্টগ্রামের চুনতি অভয়ারণ্যে ট্রেনের ধাক্কায় আহত হাতিটিকে মঙ্গলবার সকালে রিলিফ ট্রেনে করে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে হাতিটির মৃত্যু হয়।
সন্ধ্যায় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, হাতিটি ট্রেনের ধাক্কায় আহত হওয়ার খবর শুনে রবিবার রাত থেকেই আমাদের নিজস্ব টিম এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে আসছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য হাতিটিকে রিলিফ ট্রেনে করে মঙ্গলবার সকালে ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সোয়া ৪টার দিকে হাতিটির মৃত্যু হয়।
এদিকে গত সোমবার রাতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে হাতিটির উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের এক অধ্যাপকের নেতৃত্বে গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম থেকে একটি রিলিফ ট্রেন গিয়ে ক্রেন দিয়ে হাতিটিকে তুলে নেয়। এরপর ট্রেনে করে চকরিয়ায় ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত রবিবার রাতে চট্টগ্রামের লোহাগড়ার সংরক্ষিত চুনতি অভয়ারণ্য রেঞ্জ সংলগ্ন ঢাকা-কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আঘাত পায় ১০ বছর বয়সী হাতিটি। ৫ থেকে ৬টি হাতি দলবেঁধে বিচরণ করছিল। তখন একটি হাতি কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেনের ধাক্কায় আহত হয়ে পড়ে যায়। এতে মাদি হাতিটির মেরুদণ্ড- এবং পেছনের ডান পা পুরো ভেঙ্গে হাড় বের হয়ে যায়। এছাড়া মাথাও আঘাত পায়। যে কারণে হাতিটি কোনোভাবেই দাঁড়াতে পারছিল না।
বন্যপ্রাণী ও প্রাণপ্রকৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের দাবি যদি উপযুক্ত সময়ে হাতিটিকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যেত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। এছাড়া কক্সবাজার রেললাইনে এমন ঘটনা ঘটবে তা আগে থেকেই জানা ছিল, এজন্য প্রতিবাদ ও সভাও করেছিল পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। কিন্তু প্রাণপ্রকৃতিকে পাশ কাটিয়ে চুনতি অভয়ারণ্যে রেললাইন করা হয়েছে। পাহাড় কেটে এবং বনাঞ্চল উজাড় করে বিনষ্ট করা হয়েছে পরিবেশ, যার ফলে বাধাগ্রস্ত হয়েছে হাতি চলাচলের পথ।