Two pairs of trains have been launched on the Chattogram-Cox's Bazar route.

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চালু হলো দুই জোড়া ট্রেন

কক্সবাজার চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা ;

 

প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চালু হল প্রবাল এক্সপ্রেস ও সৈকত এক্সপ্রেস নামে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন। প্রথমদিন নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে কিছুটা বিলম্বে পৌঁছালেও খুশি যাত্রীরা। প্রথমদিনই সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেসে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। তবে সেবার মান আরও উন্নত করার দাবি যাত্রীদের।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যেতে শোভন চেয়ারের সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে ১৮৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া (প্রথম শ্রেণি) ৩৪০ টাকা। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ট্রেন দুটির টিকিট বিক্রি শুরু করেছিল রেলওয়ে।

ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা সৈকত এক্সপ্রেস ৯টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সেটি ৩০ মিনিট বিলম্বিত হয়। সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেস নন এসি হলেও এই দুটি ট্রেনই আন্তঃনগর। রয়েছে খাবারের গাড়ি। মূলত যাত্রী চাহিদার কারণে চট্টগ্রাম থেকে এ দুটি এক্সপ্রেস চালু করে রেলওয়ে। দিনে চট্টগ্রাম থেকে দুইবার এবং কক্সবাজার থেকে দুইবার চলাচল করবে এ দুটি এক্সপ্রেস। মূলত কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকার যাত্রী এবং পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ২ জোড়া ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে। ট্রেন দুটির সাপ্তাহিক বন্ধ সোমবার।

কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ চালুর পর ঢাকা থেকে দুই জোড়া স্থায়ী ট্রেন থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করা ট্রেনটি ছিল অস্থায়ী। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে একসঙ্গে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন উভয় পথে চলাচল শুরু হয়।

তবে প্রথমদিন যাত্রীদের প্রচুর ভিড় দেখা গেলেও সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্ট তারা। কোচের আসন নোংরা, বিলম্বে গন্তব্যে পৌঁছানো এবং রেলওয়ে কর্মচারীদের দায়িত্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের যাত্রীদের দাবি, আন্তঃনগর ট্রেনের সেবা যতটুকু হওয়া প্রয়োজন তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে এ সার্ভিস। ফলে দ্রুত এ রুটের ট্রেন সার্ভিসে সেবার মান বাড়ানো উচিত বলে মনে করছেন যাত্রীরা।

যাত্রীদের দাবি সঙ্গে একমত জানিয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এ দুই জোড়া ট্রেনে প্রতিটাতে ১৬টি কোচ থাকছে। সে হিসেবে মোট আসন ৭৪৩টি। দিনে দুই ট্রেনে আসা যাওয়া করতে পারবে মোট ২ হাজার ৯৭২ জন। প্রতিদিন যদি ৩ হাজার যাত্রী বহন করে এ রুটে তাহলে সেবাও বাড়াতে হবে এ অস্বীকার করার উপায় নেই। এ বিষয়ে আমরা আরও বিশদভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

রেলওয়ের সময়সূচি অনুযায়ী- সৈকত এক্সপ্রেস প্রতিদিন ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গিয়ে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। একই ট্রেনটি প্রবাল এক্সপ্রেস হয়ে কক্সবাজার থেকে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর প্রবাল এক্সপ্রেস হয়ে ট্রেনটি আবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে এবং সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার পৌঁছাবে। ফের সৈকত এক্সপ্রেস কক্সবাজার থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, সৈকত এক্সপ্রেস নগরীর ষোলশহরের পর জানালীহাট স্টেশনে থামবে। এরপর পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে। অন্যদিকে, প্রবাল এক্সপ্রেস থামবে ষোলশহর, গোমদী, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ ও রামু স্টেশনে।

২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ও ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে কক্সবাজারে দুটি বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সে সময় চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য দুটি ট্রেনে দুটি কোচ বরাদ্দ দেয়া হয়, এ নিয়ে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপিও দেয় স্থানীয়রা। এরপর গেল বছর ঈদুল ফিতরের সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে অস্থায়ীভাবে একটি স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। পরে কয়েকমাস পর সেটি বন্ধ করার পরিকল্পনা নিলেও তা স্থানীয়দের চাপে সেটি নিয়মিত চলতে থাকে। কিন্তু সেটিকে স্থায়ী করা হয়নি। অবশেষে শনিবার থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্থায়ীভাবে দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলো।