কক্সবাজার প্রতিনিধি
জোয়ারের পানিবৃদ্ধি, নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড় হলেই সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের রিসোর্ট, বসতবাড়ি ও চাষাবাদের জমি। স্থানীয়দের দাবি, দ্বীপ রক্ষায় দ্রুত চারপাশে বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগ ফেলতে হবে, নইলে ধীরে ধীরে এটি সাগরে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে পূর্ণিমায় জোয়ারের পানি বাড়লে কিংবা ঘূর্ণিঝড়, গভীর নিম্নচাপ বা জলোচ্ছ্বাস হলে সাগরের উচ্চতা বেড়ে তীব্র ঢেউ সৃষ্টি হয়। এতে দ্বীপের বাড়ি-ঘর, গাছপালা, কৃষিজমি ও রিসোর্ট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাত্র এক সপ্তাহ আগেই সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ১১টি রিসোর্ট ও ২০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণাক্ত পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে ফসলের জমিও।
দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, “বর্ষাকাল এলেই জোয়ারের পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়ে জমি ও ঘরে ঢুকে পড়ে। লবণ পানিতে ফসল টিকিয়ে রাখা যায় না। এ বছর কয়েক দফায় জোয়ারের পানিতে আমার জমির সব ফসল নষ্ট হয়েছে।”
স্থানীয় জেলে মফিজুল করিম বলেন, “ঢেউয়ের ধাক্কায় আমাদের ঘরের মাটি ও কাঠের বেড়া ভেঙে যাচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষা বা ঝড়ের মৌসুমে আমরা নতুন করে ঘর মেরামত করতে বাধ্য হচ্ছি।”

পর্যটন ব্যবসায়ী তৈয়ব উল্লাহ জানান, এবারের মতো তীব্র ঢেউ আগে দেখিনি। সাগরের পানি এতটা উঁচু হয়েছে যে রিসোর্টের সামনের পাকা দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। প্রতি বছর পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, “দ্বীপের চারপাশে উঁচু করে বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগ না দিলে এবং বড় কোনো পরিকল্পনা না নিলে সেন্টমার্টিন ধীরে ধীরে সাগরে হারিয়ে যাবে। গত এক সপ্তাহে ১১টি রিসোর্ট, ২০টি বসতঘর ও চাষাবাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “বেড়িবাঁধ বা জিও ব্যাগ দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে আমার কাছে তথ্য বা পরিকল্পনা নেই। তবে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”