ইত্তেফাক
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল ও সাবেক এমপি আশেক উল্লাহ রফিকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান।
সোমবার (২০ আগস্ট) কক্সবাজার সদর মডেল থানায় জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে করা মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও দেড় থেকে ২০০ জনকে (নং-১৯/২০২৪)।
মামলার আসামিরা হলেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালা উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ জয়, ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, পৌর যুবলীগের সভাপতি ডালিম বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহেদ মোহাম্মদ ইমরান, কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক, কক্সবাজার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান তারেক, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক মনিরসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদি বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ্য করেছেন- গত ৪ আগস্ট কোটাসংস্কার বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করছিল। সেসময় ১নং ক্রমিকের আসামি সাইমুম সরওয়ার কমল ও ২নং ক্রমিকের আসামি মুজিবুর রহমান তাদের সন্ত্রাসীদের জেলা কার্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পেয়ে আসামিরা যথাক্রমে মোনাফ সিকদার, মারুফ আদনান ও জাফর আলম ও অন্যান্য আসামিরা কিরিচ দিয়ে কার্যালয়ের বিপুল আসবাবপত্র কেটে ফেলে এবং এস এম সাদ্দাম হোসেন ও মঈন উদ্দিন মঈনসহ কয়েকজন মিলে হাতে থাকা পেট্রোল ও গান পাউডার কার্যালয়ের ভিতরে ছিটিয়ে দিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে কার্যালয়ে থাকা আসবাবপত্র ও লাইব্রেরির গচ্ছিত বই পুড়ে গিয়ে অনুমানিক ত্রিশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন- স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে বিএনপির এই কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একাধিকবার হামলা ও ভাঙচুর করেছে। কিন্তু তাঁরা থানায় মামলা করতে পারেননি। উল্টো বিভিন্ন গায়েবি মামলায় দলের নেতা-কর্মীদের আসামি করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। বিএনপি কার্যালয়ে সেদিন যারা ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, মামলায় তাদের আসামি করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মদ রকিবুজ্জামান জানান, জেলা বিএনপির অফিসে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামে এক বিএনপি নেতা বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলকে।
এরআগেও শুক্রবার আরও একটি মামলা করা হয়েছে। ১৭ আগস্ট রাতে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ারসহ আওয়ামী লীগের ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। ৪ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র -জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ২৫ বছর বয়সী অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনার ১৩ দিন পর হত্যা মামলাটি করেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া। গতকাল পর্যন্ত গুলিতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।