রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আন্দোলনরত ২৮ শিক্ষককে আটকের ৭ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

উখিয়া কক্সবাজার

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

দিনভর উত্তেজনা ও টানাপোড়েনের পর কক্সবাজারের উখিয়ায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে আটক হওয়া ২৮ জন শিক্ষককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে সর্বদলীয় একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে থানা থেকে একে একে ছাড়া পান আটক শিক্ষকরা।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া উপজেলা সদর স্টেশনের ফলিয়াপাড়া মোড়ে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষকেরা। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে অন্তত ৮ জন শিক্ষক আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী জিনিয়া শারমিন রিয়াসহ ২৮ জনকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিরা উখিয়া থানা ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ বিক্ষোভ চালান।

পরে উখিয়া থানা প্রাঙ্গণে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও শিবির নেতারা গিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সর্বদলীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয় এবং তাদের মধ্যস্থতায় আটক ২৮ জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, “আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষকদের ওপর হামলা ও আটক অভিযানে জড়িতদের বিচার, গঠিত কমিটির মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ, প্রধান উপদেষ্টার কক্সবাজার সফরে বিষয়টি উত্থাপন, এবং বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ।”

ছাড়া পেয়ে জিনিয়া শারমিন রিয়া বলেন, “আমরা অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছিলাম। কিন্তু আমাদেরকে মারধর করে থানায় আটকে রেখেছিল পুলিশ। পরে চিকিৎসা খরচ বহনের আশ্বাসসহ আলোচনার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের বিচার চাই।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কক্সবাজার জেলার সদস্য সচিব সাগর উল ইসলাম বলেন, “আটকদের দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়েছিল। পরে আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।”

এর আগে সোমবার (১৮ আগস্ট) চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা একই দাবিতে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ১০ ঘণ্টা উখিয়ার কোর্টবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়ে এবং প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ জুন জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে (আরআরআরসি) লেখা এক চিঠিতে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। এর আগেই প্রায় ১ হাজার ২৫০ জন শিক্ষক চাকরিচ্যুত হন।