বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহ নিহত, দাবি ইসরায়েলের

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এমনটাই দাবি করেছে ইসরায়েল। আজ শনিবার দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনী আইডিএফ এই দাবি করে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।  

আইডিএফ দাবি করেছে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে একটি শহরতলিতে অবস্থিত হিজবুল্লাহর হেডকোয়ার্টারে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। সেই হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও বিশ্লেষণ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলেছে, অঞ্চলটি বৈরুতের দক্ষিণের দাহিয়েহ শহরতলি। ইসরায়েলি হামলার পর সেখান থেকে একাধিক বড় ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। এলাকাটিতে হিজবুল্লাহর শক্তিশালী উপস্থিতি আছে। এ ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় গোষ্ঠীটির অনেক শীর্ষ নেতাই বসবাস করেন। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচে আদ্রাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী…সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে নির্মূল করেছে।’ বিবৃতিতে তিনি আরও দাবি করেন, ‘হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ নেতা আলী কারাকিও এই হামলায় নিহত হয়েছেন।’ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক পৃথক পোস্টে বলেছে, ‘হাসান নাসরুল্লাহ আর বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি দিতে সক্ষম হবেন না।’ 

আরবি ভাষায় পোস্ট করা আদ্রাইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে। সেই সময়টাতে গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিচালনার বিষয়ে সমন্বয় সাধন করছিল।’ 

ইসরায়েলি হামলার পর গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছিল, নাসরুল্লাহর কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে সেই হামলার কিছুক্ষণ পর হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ অপর একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছিল যে, নাসরুল্লাহ বেঁচে আছেন। ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থাও তাঁর নিরাপদ থাকার খবর দিয়েছিল। 

তবে রয়টার্স হিজবুল্লাহর কোনো সূত্র থেকে স্বাধীনভাবে নাসরুল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। তাঁরা ইসরায়েলি দাবির বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি। নাসরুল্লাহ ৩২ বছর ধরে হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

নাসরুল্লাহ নেতৃত্বে বিগত কয়েক দশকে হিজবুল্লাহ একটি আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত হয়। যেটি মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তেহরানের প্রভাবকে বাড়িয়ে তুলেছিল। তাঁর মৃত্যু কেবল হিজবুল্লাহর জন্যই নয়, ইরানের জন্যও একটি বড় ধাক্কা হবে। কারণ, ১৯৮২ সালে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিল।

গতকাল শুক্রবার হিজবুল্লাহর কমান্ড সেন্টারে হামলার পর আজ শনিবারও ইসরায়েল বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়েছে। যা গোষ্ঠীটির সঙ্গে ইসরায়েলের ব্যাপক সংঘাতের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।