মিজানুর রহমান মিজান :
মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে নাফ নদীতে আরাকান আর্মির স্বেচ্ছাচারীতার কারণে থমকে গেছে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। দীর্ঘ চার মাস ধরে বন্ধ অবস্থায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই স্থলবন্দরটির সকল কার্যক্রম। এতে বন্দরে পড়ে আছে কয়েক’শ ট্রাক রপ্তানিপণ্য। এছাড়া পঁচে যাচ্ছে বন্দরের গোদামে জমে থাকা কাঁচা পণ্যও।
বন্দরের অচলাবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও বন্দর-সংশ্লিষ্ট অস্থায়ী দোকানিরাও। আর এই সুযোগে ভয়ংকরভাবে বেড়েছে চোরাচালান। এতে ক্ষতি হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। পিছিয়ে পড়ছে টেকনাফের অর্থনীতি।
বন্দর পরিচালনার দায়ীত্বে থাকা ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বন্দর খোলা আছে। কাস্টমসও আছে, আমরা আছি। তবে মালামাল আনা-নেওয়া বন্ধ আছে।
টেকনাফ স্থলবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, অফিস খোলা থাকলেও মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির বাধার কারণেই টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি দীর্ঘ চারমাস ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে স্থলবন্দরটি চালুর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
টেকনাফ বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির (সিএন্ডএফ) সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘আরাকান আর্মির স্বেচ্ছাচারিতা ও অপেশাদার আচরণ রোধে উভয় দেশের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করা উচিত।’
জানতে চাইলে ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য সাময়িক বন্ধ রয়েছে। তবে এই বাণিজ্য চালুর ক্ষেত্রে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষসহ আরও কিছু পক্ষের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন,’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকার ২৭০ কিলোমিটার পুরোটাই আরাকান আর্মির দখলে চলে যায় গত ৮ ডিসেম্বর। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ওই সময় থেকেই কমে আসে টেকনাফ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি।
এপ্রিল থেকে মূলত বন্ধ রয়েছে টেকনাফ স্থলবন্দর হয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
কাস্টম্সের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চেই মিয়ানমার থেকে আলু, বিস্কুট, পানি ও প্লাস্টিকজাত পণ্যসহ আমদানি হয় ৬৭৫ দশমিক ৪৩ টন পণ্য। এর বিপরিতে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় ৭ কোটি ৯৬ লাখ ৫ হাজার ২৬৫ টাকা। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রায় তিন লাখ ৩৪ হাজার ৫২৪ দশমিক ৫২ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়।