টেক্সাসের মরুভূমি অঞ্চলে ধাপের পর ধাপ বসিয়ে হোটেলের দেয়াল গাঁথছে এমনই এক ৩ডি প্রিন্টার, যা দেখতে অন্যান্য ৩ডি প্রিন্টারের মতো হলেও আকারে একটি বড় ক্রেনের সমান।
এল কসমিকো নামের হোটেলটি এরইমধ্যে মারুফা শহরের উপকণ্ঠে রয়েছে। এতেই যোগ হচ্ছে নতুন ৪৩টি হোটেল ইউনিট ও ১৮টি আবাসিক বাড়ি। আর এটি তৈরি হচ্ছে ৪০ একর জমির ওপর।
এটি বিশ্বের প্রথম ৩ডি-প্রিন্টেড হোটেল, এমনই দাবি করেছেন এল কসমিকো’র মালিক লিজ ল্যামবার্ট। একই অহঙ্কার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে অস্টিন শহরের ৩ডি প্রিন্টিং কোম্পানি ‘আইকন’ ও নকশা কোম্পানি ‘জার্কে ইঞ্জেলস গ্রুপের প্রকৌশলীদের।
ল্যামবার্ট বলেন, এ প্রযুক্তি অভূতপূর্ব সৃজনশীলতার সুযোগ করে দেয়।
“বেশিরভাগ হোটেলই চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ। আর অনেক সময় আপনাকে একই ইউনিট বেশ কয়েকবার নির্মাণ করতে হয়,” বলেন ল্যামবার্ট।
“আমি কখনওই এত কম বাধায় ও এমন মসৃণভাবে গম্বুজ, বাঁকানো দেয়াল আর অর্ধবৃত্ত গাঁথতে দেখিনি। নির্মাণের এই পুরো বিষয়টিই যেন অবিশ্বাস্য।”
ল্যামবার্টের মতে, এইসব ইউনিটের মধ্যে নানা ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল কাজে লাগানো যেতে পারে, যা স্বাভাবিক উপায়ে করা গেলেও এতে খরচ পড়ে অনেক।
নির্মাণাধীন প্রথম দুটি ইউনিটের একেকটি তলায় ১২ ফুট উঁচু দেয়াল আছে, যার মধ্যে তিন বেডরুমের আবাসিক স্যুট ও একক রুমের ইউনিট আছে।
এর বাঁকানো বেইজ রঙের দেয়ালগুলো নির্মাণে কাজ করছে আইকনের সাড়ে ৪৬ ফুট চওড়া, সাড়ে ১৫ ফুট উঁচু ও পৌনে পাঁচ টন ওজনের ‘ভালকান’ নামের ৩ডি প্রিন্টার।
এ ছাড়া, অস্টিন শহরের কাছাকাছি অঞ্চলে ৩ডি প্রিন্টেড মানব বসতি তৈরির কাজও করছে আইকন।
তবে, দীর্ঘমেয়াদে ৩ডি প্রিন্টেড নির্মাণশিল্প জনপ্রিয় হলে এর ধাক্কা চাকরির বাজারে গিয়ে লাগতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ‘চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রভাষক মিলাদ বাজলি।
“সামাজিক বাস্তবতার পাশাপাশি এখানকার চাকরির অবস্থা, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর অর্থনৈতিক যে প্রভাব পড়তে পারে, তাতে করে ৩ডি প্রিন্টিং পদ্ধতিতে যাওয়ার আগে এর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে,” বলেন বাজলি।
এল কসমিকোয় নির্মাণকাজ শেষ হতে সময় লাগতে পারে ২০২৬ সাল পর্যন্ত, যেখানে বিভিন্ন ইউনিটে প্রতি রাতের ভাড়া দুইশ ডলার থেকে সাড়ে চারশ ডলারের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নিয়েছে হোটেলটি।