বিশেষ প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী থেকে ৬ মাঝিমাল্লাসহ দুটি ট্রলার আরাকানার্মি ধরে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দু রশিদ।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় এ দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, টেকনাফের ঘাট থেকে ইট, বালি ও সিমেন্ট বোঝাই দুটি ট্রলার সোমবার বিকেলে ৬ মাঝিমাল্লা নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু নাফ নদীতে জোয়ার ভাটার কারণে ট্রলার দুটি শাহপরীর দ্বীপে অবস্থান নেয়। এরপর মঙ্গলবার ট্রলার দুটি নাফ নদী হয়ে আবারো সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু বুধবার পেরিয়ে গেলেও সেন্টমার্টিনে পৌঁছায়নি। জানা গেছে, ৬ মাঝিমাল্লাসহ দুটি ট্রলার মিয়ানমারের আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে। বিষয়টি প্রশাসন কে অবহিত করা হয়েছে।
কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন টেকনাফ থেকে সিমেট ও বালি ভর্তি দুটি বড় ফিশিং ট্রলার সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদের মালিকানাধীন এসবি রাসেল ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রউফের মালিকানাধীন এসবি আরিফ সেন্টমার্টি যাওয়ার কথা বলে শাহপরীরদ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারে মালামাল গুলো নামি দিয়ে ফেরার পথেই আরাকান আর্মির হাতে আটকে পড়ে। ট্রলার দুটির মাঝি হলেন, আব্দুর রহমান ও মোস্তাক। তারা নিয়মিত এ সব পাচার কাজ করে থাকেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত ১২ নভেম্বর বালু আর সিমেন্ট নিয়ে টেকনাফ থেকে ৬ জন মাঝি মাল্লাহসহ ২টি ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা করেন। ট্রলার দুটি সেন্টমার্টিনে না গিয়ে মালামাল গুলো অবৈধভাবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পাচারের জন্য নাইক্ষ্যংদিয়া খালের ভিতরে প্রবেশ করে চরে আটকে পড়ে। বর্তমানে ট্রলার দুটি মিয়ানমার চরে আটক রয়েছে বলেও জানা যায়।
টেকনাফ কেরনতলী খালে দায়িত্বে থাকা আলম বলেন, ১০ নভেম্বর কেরনতলী খাল থেকে আব্দুর রহমান ও মুস্তাক মাঝি বালি এবং সিমেন্ট নিয়ে দুইটি ট্রলার সেন্টমার্টিনে উদ্দেশ্যে রওনা করেন। সেটি কোথায় গেছে এবং কোথায় আছে আমার জানা নেই।
সেন্টমার্টিন ট্রলার মালিক সমিতির লাইনম্যান মো. করিম বলেন, সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি আব্দুর রহমান ও মোস্তাক মাঝি টেকনাফ থেকে সিমেন্ট ভর্তি দুটি ট্রলার মিয়ানমারে আটকে আছে। তারা এখনো সেন্টমার্টিনে ফিরে আসে নাই।
টেকনাফে ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, কেরনতলী খাল থেকে বাংলাদেশি দুটি ট্রলার সেন্টমার্টিনে মালামাল নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মিয়ানমারে অভ্যন্তরে মালামাল গুলো পাচার করে ফেরার পথে আটকে পড়ে। বিষয়টি জানার পর আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং ট্রলার দুটি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী জানান, সরকারি নির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোন ধরনের নির্মাণ পণ্য যাওয়ার অনুমতি নেই। এ ছাড়া যেগুলো যাবে তাও বিজিবি ঘাট থেকে বের হবে এবং নদীতে কোস্ট গার্ডের ব্যবস্থাপনায় যাবে। কিন্তু যে কেরনতলী খাল থেকে দুইটি ট্রলার বের হয়েছে সে খাল থেকে কোনোভাবেই পণ্য বোঝাই কোন ট্রলার বের হওয়ার কথা না। কিন্তু চোরাই পথে অবৈধভাবে মালামাল পরিবহণ করে চোরাকারবারিরা কীভাবে কার কাছ থেকে মালামাল লোড করল সেটা যাচাই করা হবে। বোট দুইটি উদ্ধারে বিজিবি-কোস্ট গার্ড কাজ করছে।