কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাব ও বিজিবির যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে এবং পাচারকারীদের হাতে বন্দি থাকা ৮৪ জন ভুক্তভোগীকে অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন, টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান ও র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এবং র্যাব-১৫ এর সমন্বয়ে ২১ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী এই অভিযান পরিচালিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচার, মাদক চোরাচালান ও মুক্তিপণ বাণিজ্য ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় থাকলেও সম্প্রতি প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া সূত্র জানায়, পাচারকারীরা পাহাড়ি আস্তানায় ভুক্তভোগীদের আটকে রেখে বিদেশে নেয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিল। ২০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে এক পাচারকারী ও চারজন ভুক্তভোগীকে আটক-উদ্ধারের পর পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাহারছড়া কচ্ছপিয়া থেকে রাজাছড়া পাহাড় পর্যন্ত বিস্তৃত চিরুনি অভিযান চালানো হয়।
অভিযান চলাকালে পাচারকারীরা যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং কয়েকজন ভুক্তভোগীকে পাহাড় থেকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। তবে নিরপরাধদের জীবন ঝুঁকিতে না ফেলে বিজিবি-র্যাব কৌশলে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। প্রায় ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে দুই পাচারকারীকে আটক করা হয় এবং একটি ওয়ানশুটার গান, একনলা বন্দুক, একটি বিদেশি পিস্তল, দেশীয় রামদা ও চাকুসহ গুলি উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে পাহাড় ও পাদদেশ থেকে মোট ৫১ জন, পাহাড়ের চূড়া থেকে ৬ জন এবং বড়ইতলি এলাকা থেকে আরও ৪ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়। সব মিলিয়ে ৮৪ জন ভুক্তভোগীকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
আটককৃত তিনজন পাচারকারী হলেন, টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর কচ্ছপিয়া এলাকার আব্দুল্লাহ (২১), রাজারছড়া এলাকার সাইফুল ইসলাম (২০) এবং মো. ইব্রাহিম (২০)।
এছাড়া একাধিক পলাতক পাচারকারীর নামও চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। দেশের নিরাপত্তা ও মানুষের জীবন রক্ষায় বিজিবি ও র্যাবের জিরো টলারেন্স নীতি ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে।