জোয়ারের পানিতে লন্ডভন্ড সেন্টমার্টিনের ১১ হোটেল-রিসোর্ট

টেকনাফ

মো. শহিদ উল্লাহ :

বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির প্রভাবে কয়েকদিন ধরে উত্তাল ঢেউয়ের আঘাত হানছে উপকূলের বিভিন্ন এলাকায়।

গত তিনদিনে সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের বিভিন্ন অংশ। বতর্মানে জোয়ারের আঘাতে সেখানকার সৈকত সংলগ্ন ১১টি হোটেল-রিসোর্টের বিভিন্ন প্রতিরক্ষা দেওয়ালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে জোয়ারের আঘাতের এসব স্থাপনা ও প্রতিরক্ষা দেওয়াল ধসে পড়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ১-৩ ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন অংশের গাছপালা ও হোটেল রিসোর্টের প্রতিরক্ষার দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। দ্বীপের বিভিন্ন স্থান দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। এমন ভয়াবহতা এর আগে দেখেনি দ্বীপবাসী।

সেন্ট মার্টিনের জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত তিনদিনে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে বড় বড় ঢেউ তাণ্ডব চালিয়েছে। পাকা স্থাপনাসহ ১১টি হোটেল- রিসোর্টে প্রতিরক্ষা দেওয়াল তছনছ হয়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে বহু গাছপালা।

ক্ষতির শিকার হোটেল- রিসোটগুলো হলো- হোটেল অবকাশ পর্যটন, নোনাজল বীচ রিসোর্ট, আটলান্টিক রিসোর্ট, বীচ ক্যাম্প রিসোর্ট, নিল হাওয়া বীচ রিসোর্ট, শান্তি নিকেতন বীচ রিসোর্ট, মেরিন বীচ রিসোর্ট, পাখি বাবা রিসোর্ট, সি-ভিউ রিসোর্ট, ড্রিমার্স প্যারাডাইস রিসোর্ট, সানডে বিচ রিসোর্ট।

সেন্টমার্টিন উত্তর সৈকতের ডিমাস প্যারাডাইসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের হোটেলের প্রতিরক্ষা দেওয়ালের পাশাপাশি কর্মচারীদের রেস্ট হাউজের সেমিপাকা টিনশেড ভবনের একটি কক্ষ জোয়ারের ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেঙে গেছে। শুধু তাই নয়, উত্তর ও পশ্চিম সৈকতে আরও কয়েকটি হোটেল-রিসোটের প্রতিরক্ষা দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন এলাকার হোটেল-রিসোটগুলো জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে অধিকাংশ স্থানের স্থাপনা ও পাকা প্রতিরক্ষা দেওয়ার ভেঙে গেছে। জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়া স্থানগুলো ভেসে উঠছে।

৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, সেন্ট মার্টিনে টেকসই বেড়িবাঁধের কোনো বিকল্প নেই। গত তিনদিনের অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিনের চারিদিক।

১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সরকার পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে ইসিএ এলাকায় ইতিমধ্যে অন্যন্য স্থাপনা ছাড়া শুধু আবাসিক হোটেল নির্মিত হয়েছে দুইশটির উপরে। তাই দ্রুত সময়ে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার মহামান্য হাই কোট আদেশ দিলেও কার্যকর করা হয়নি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানির আঘাতে বেশ কয়েকটি হোটেল-রিসোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি আমরা দেখছি এবং স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।