দরিয়া নগর ডেস্ক
জাপানের ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) আইনপ্রণেতাদের ভোটে দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। তিনিই হতে চলেছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
কট্টর জাতীয়তাবাদী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের শিষ্য হিসেবে বিবেচিত সানায় তাকাইচিকে পরাজিত করে দলের নেতা হয়েছেন ইশিবা (৬৭)। জয়ী হলে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতেন তাকাইচি।
প্রথম পর্যায়ে নয় প্রার্থীর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেন এই দুইজন। আজ রানঅফ ভোটে ২১৫ বনাম ১৯৪ ভোটে জয়ী হলেন ইশিবা।
টোকিওতে এলডিপির সদর দপ্তরে ভোটের ফল ঘোষণার পর ইশিবা হাসিমুখে চোখ থেকে চশমা খুলে ফেলেন। এরপর তার অশ্রুমাখা চোখ মুছে বারবার জাপানি কায়দায় মাথা নত করে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে আসা দলের সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সম্মান জানান তিনি।
এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি মানুষের ওপর আস্থা রাখতে চাই। সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সত্য বলতে চাই। এই দেশকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে চাই, যাতে আবারও সবাই হাসিমুখে এখানে বসবাস করতে পারেন।’
২০১২ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ইশিবা। জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার পর আততায়ীর হাতে নিহত হন আবে।
রক্ষণশীল এলডিপি দল বেশ কয়েক দশক ধরে দেশ শাসন করে এসেছে। পার্লামেন্টেও তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার স্বভাবতই পার্লামেন্টে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হবেন ইশিবা।
৭০ এর দশকের পপ তারকাভক্ত ইশিবা দাবি করেন, কৃষিখাতের সংস্কারসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন।
অবসর সময়ে সামরিক মডেল নির্মাণ করেন ইশিবা।
এর আগে, ইশিবা সামরিক বাহিনীর বাজেট বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং এশিয়ায় ন্যাটোর মতো একটি সামরিক জোট গঠনের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বিষয়গুলো চীনকে সতর্ক করেছে বলে বিশ্লেষকরা দাবি করেন।
তবে ভোটের ফল ঘোষণার পর বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, দেশটি জাপানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায়, কারণ, ‘চীন-জাপান সম্পর্কের ধারাবাহিক ও সুসংহত উন্নয়ন দীর্ঘ মেয়াদে দুই দেশের নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা মেটাবে।’
ইশিবা জয়ী হওয়ার সংবাদে ইয়েন চাঙ্গা হয়েছে। মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য ১৪৬ দশমিক ৪৯ থেকে নেমে ১৪২ দশমিক ৯৪ হয়েছে।
ইশিবা জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা নীতি সংস্কার ও শিথিল করতে আগ্রহী। অর্থনীতিবিদদের মতে, নীতিনির্ধারকরা ইশিবার নিয়োগকে স্বাগতম জানাবেন।
তিনি গ্রাম অঞ্চলের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার ও দুর্যোগ প্রতিহত করতে স্থানীয় সরকারি সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেবেন বলেও জানিয়েছেন।