কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:
কুতুবদিয়ায় শত বছরের চলাচলের রাস্তা দখল করে মৎস্য ঘের তৈরি করছে প্রভাবশালীরা। আর এই সরকারী রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনেও বাধা দেয়া হয়েছে। ফলে স্থানীয়দের সাথে প্রভাবশালীদের বিরোধ হামলায় রূপ নিয়েছে।
উপজেলার উত্তর ধুরুং ২নং ওয়ার্ডে আনু বাপের পাড়ায় সংঘঠিত এ ঘটনায় ইতোমধ্যে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আনু বাপের পাড়ার প্রায় ২৫ পরিবারের শত বছর ধরে চলাচলের একমাত্র রাস্তা ছিল মৃত আবদুস সাত্তারের পুর্ব পুকুর পাড়। শত বছর পর সম্প্রতি স্থানীয় মিজবাহ উদ্দিন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে রাস্তাটি দখল করে নেয়।
ওই এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুস সাত্তারের পুত্র জাফর আলম জানান, আমার বাবা মৃত আবদুস সাত্তার মৌসুম ভিত্তিক মজুরীতে কাজ করতে ইবনে আমিনের বাসায়। ২শ আড়ি ধানের বিনিময়ে আমার বাবা রাস্তাটি কিনে নেন। তৎকালীন বেচাকেনায় মানুষের বিশ্বাসের জায়গাই ছিল মুল দলিল। ইবনে আমিন এবং তার সন্তান মহিবুল্লাহ চৌধুরী বেঁচে থাকা পর্যন্ত আমরা নির্বিঘ্নে হাঁটাচলা করি। প্রায় শত বছর পর ইবনে আমিনের নাতি মিজবাহ উদ্দিন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রাস্তাটি দখল করে নেয়।
জাফর আলমের বড় ছেলে মনসুর আলম জানান, তিনি পেশাগত কারণে চট্টগ্রাম থাকেন। তার পরিবারে কথা বলার মত কেউ না থাকার সুবাদে মিজবাহ উদ্দিন পুকুর পাড় (চলাচলের রাস্তা) ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে দখল করে নেয় এবং সেটি তার মৎস্য ঘেরে সংযুক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, মৃত মহিবুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে মিজবাহ উদ্দিনকে আমরা অনেক অনুরোধ করেছি রাস্তাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য। প্রয়োজনে জমির মূল্য আবারো পরিশোধ করবো বলেছি। তারপরও সে পুকুর পাড় (চলাচলের রাস্তাটি) দখল ছাড়েনি। তারা রাস্তার অংশ বাদ দিয়ে জমি পরিমাপ করেছেন। যার ফলে সে আমাদের সীমানায় ঢুকে গেছে।
তিনি প্রশাসনিকভাবে সঠিক পরিমাপেরও দাবি জানান।
অন্যদিকে শত বছর ধরে চলা সরকারী রাস্তায় উভয়পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাট। তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে শফিউল মোরশেদ ও মিজবাহ উদ্দিন রাস্তার খাস জমি দখল করে নেয়। কিছু অংশে দোকান ও কিছু অংশ মিজবাহ উদ্দিন মৎস ঘের করে দখল করে রেখেছে। ফলে মানুষের চলাচল ও মালামাল পরিবহনের চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
চলতি বছর বর্ষায় রাস্তাটি চরম ক্ষতিগ্রস্থ হলে মনসুর আলম রাস্তার সংস্কার করে বাড়ি নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন করছিল। ওই সময় সরকারী রাস্তা দিয়ে মালামাল পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করে মিজবাহ উদ্দিনের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে মনসুর আলম উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কুতুবদিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, বিষয়টি তদন্ত ও মীমাংসার জন্য উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হালিম সিকদার জানান, অভিযোগের বিষয়ে তাকে দায়িত্ব দেয়া হলে মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে পরিষদে হাজির থাকার জন্য বলা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।