নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পাঠান মো. সাইদুজ্জামান বলেছেন, প্রত্যেকটি কাজে ছেলে শিশুর মত আমাদের কন্যা শিশুরও সমান অধিকার রয়েছে। তাদের প্রতি কোন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। আজকের কন্যা শিশুরাই আগামী দিনের মা।
বুধবার (৮ অক্টোবর)সকালে ‘আমি কন্যা শিশু-স্বপ্ন গড়ি, সাহসে লড়ি, দেশের কল্যাণে কাজ করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা শিশু একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।
বলেন, কন্যা শিশুদের প্রত্যেকের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা অত্যন্ত জরুরী। অন্যান্য শিশুর মত কন্যা শিশুদেরকেও পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এ ব্যাপারে এ ব্যাপারে প্রত্যেক শিশু ও অভিভাবককে সচেতন থাকতে হবে। কন্যা শিশুদেরকে সুস্থ থাকতে হলে স্কুলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনবোধে ওয়াশ রুম বা বাথরুম ব্যবহার করতে হবে। স্কুলের বাথরুমে নয়, বাসায় গিয়ে ওয়াশ রুমে যাবো-এ কথাটি শিশুদেরকে পরিহার করতে হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও এনজিও সমূহের সহযোগিতায় এবং কারিতাস-চট্টগ্রাম অঞ্চলের ‘লাইটি’ প্রকল্পের সৌজন্যে জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও শিশু অ্যাকাডেমির আবৃত্তি বিভাগের প্রশিক্ষক অ্যাডভোকেট মিলি চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় কন্যাশিশু দিবসের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু অ্যাকাডেমিতে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মোছলেহ্ উদ্দিন।
এসময় বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ কন্যা শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম প্রধান অন্তরায়। বাল্যবিবাহের কারণেই কন্যা শিশু তাদের শিক্ষা জীবন থেকে ঝড়ে পড়ে। বাল্যবিবাহ রোধসহ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কন্যা শিশুর অধিকার ও নিরাপত্তাকে সমুন্নত রাখতে হবে। ছেলে শিশুদের পাশাপাশি কন্যা শিশুদেরকে পড়ালেখা ও আনন্দ-বিনোদনে উৎসাহিত করতে হবে। মোবাইলের পরিবর্তে বেশি বেশি করে বই পড়ায় উৎসাহিত করার মাধ্যমে তাদেরকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বেড়ে উঠার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তাদেরকে নীতি-নৈতিকতা শিখাতে হবে। প্রত্যেক কন্যা শিশুর নেতৃত্ব বিকাশে এখন থেকে স্কুল পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। শিশু অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে বিষয়ে সকল অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। শিশু সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থা ও সংগঠনগুলো এগিয়ে আসলে শিশু নির্যাতন বন্ধসহ শিশুশ্রম আইন ও শিশু নীতি বাস্তবায়ন হবে।
কারিতাস-চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মার্সেল রতন গুদা, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইলমা’র প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, ঘাসফুল’র উপ-পরিচালক সাদিয়া রহমান, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম’র পরিচালক নাসরিন সুলতানা খানম ও এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য ফরহাদুল আলম। বক্তব্য রাখেন শিশু অ্যাকাডেমিতে আবৃত্তি বিভাগের শিক্ষার্থী শিশু প্রতিনিধি সৈয়দা শাওরিয়া আফরিন। সবশেষে শেষে শিশু একাডেমি ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটিকা মঞ্চস্থ হয়। শিশু অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।