দ্বীর্ঘ ৭ বছর পর অবশেষে নাফ নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।

কক্সবাজার টেকনাফ

বিশেষ প্রতিনিধি :

ইয়াবা পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অযুহাতে দ্বীর্ঘ ৭ বছর পর আদালতের নির্দেশে নাফ নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সর্ত সাপেক্ষে সাময়িক অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আজ বৃ্‌হস্পতিবার কক্সবাজার জেলাপ্রশাসনের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

এর আগে গত বছর ১১ নভেম্বর জনস্বার্থে দায়ের করা হাই কোর্টের এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এর আদেশে নাফ নদীতে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সর্তসাপেক্ষে তিন মাসের জন্য সাময়িক অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে নাফ নদীতে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞার আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও বেআইনি বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাই কোর্ট।

জেলা প্রশাসনের জারিকৃত আদেশে বলা হয়েছে, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত রুলনিশিতে টেকনাফ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফনদীতে জেলে কর্তৃক বৈধভাবে মাছ ধরা কার্যক্রম চালু করতে জেলা প্রশাসক কর্তৃক ৫ শর্তে মাছ শিকারের অনুমতি প্রদান করা হলো।

শর্ত গুলো হলো:
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জলসীমার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবে।

জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবি’র ৫টি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন/পরিচয়পত্র দেখাবে এবং মাছ-ধরা-শেষে-ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশী করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। কোনো জেলে চেকপোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবে না।

কোনোক্রমে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না।

মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদান করা যেতে পারে। যাতে কোনক্রমে নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে।

এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। ৩ মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, মাদক পাচার সহ নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের মধ্যবর্তী নাফ নদীতে মৎস্য আহরণ দুই মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর গত সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মৎস্য আহরণের সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। এর ফলে ওই এলাকার ১০ হাজার ৫৮০ জন রেজিস্ট্রার্ড জেলে পরিবারে দুর্দিন নেমে এসেছিলো।